কারেন্সি বিল্ডিং... আগ্রা ব্যাংক থেকে ঘরে বাইরে মিউজিয়াম ।। CURRENCY BUILDING .... from AGRA BANK to GHARE BAIRE MUSEUM, KOLKATA

কারেন্সি বিল্ডিং... আগ্রা ব্যাংক থেকে ঘরে বাইরে মিউজিয়াম ।। CURRENCY BUILDING .... from AGRA BANK to GHARE BAIRE MUSEUM, KOLKATA

ডালহৌসি স্কোয়ারের দক্ষিণ-পূর্বকোণে ইটালিয়ান আর্কিটেকচারে তৈরি হওয়া এই বাড়ি, যা একসময়ে গড়ে তুলেছিল আগ্রা ব্যাংক। পরবর্তীকালে বাড়িটি ব্রিটিশ সরকার কিনে নিলে, রূপান্তর হয় মুদ্রা আদান-প্রদানের অফিস হিসাবে। যা কলকাতার ইতিহাসে মুদ্রা ভবন বা পেপার কারেন্সি অফিস নামে পরিচিত। আগ্রা ব্যাংক থেকে মুদ্রা ভবন। দীর্ঘ ত্রিশ বছর কারেন্সি অফিস হিসাবে ব্যবহারের পর বর্তমানে বাড়িটি রূপান্তর হয়েছে মিউজিয়ামে, আর্ট অ্যান্ড দ্যা আর্টিস্ট অফ বেঙ্গল। সম্প্রতিকালে তৈরি হওয়া কলকাতার দুটি মিউজিয়াম এক মেটক্যাফে হলের আমি কলকাতা, আর দ্বিতীয়টি এই কারেন্সি বিল্ডিং এর ঘরে বাইরে মিউজিয়াম

আজকের এই ব্লগ এই বাড়িটিকে কেন্দ্র করে। ফিরে দেখা এই বাড়িটির ইতিহাস ও কীভাবে সময়ের সাথে ব্যাংক, কারেন্সি অফিস থেকে বর্তমান মিউজিয়ামে পরিবর্তন হল।

ইটালিয়ান আর্কিটেকচারে তৈরি হওয়া আগ্রা ব্যাংক থেকে কারেন্সি অফিস

ক্যালকাটা অক্শন কোম্পানি ও আগ্রা ব্যাংকঃ-

ডালহৌসি স্কোয়ারের দক্ষিণ-পূর্বদিকের এই অংশে যেখানে এই কারেন্সি বিল্ডিংটি গড়ে উঠেছে, ঠিক সেই জায়গায় ছিল ক্যালকাটা অক্শন কোম্পানির গুদামঘর। ১ নং ট্যাঙ্ক স্কোয়ার ইস্ট এই ছিল তখনকার কলকাতার ঠিকানা। প্রসঙ্গত বলে রাখি এই ট্যাঙ্ক স্কোয়ার-ই হল বর্তমানে ডালহৌসি স্কোয়ার। ট্যাঙ্ক যা বর্তমানে লালদীঘি। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দের আগেও কলকাতা অক্শন কোম্পানি তার নিলামের সমস্ত জিনিসপত্র মজুত রাখত এই জায়গাটিতে। কিন্তু সেসময়ে প্রতিযোগিতার বাজারে কলকাতা অক্শন কোম্পানি বেশিদিন টিকলো না। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দের গোড়ার দিকেই চিরতরে বন্ধ হয়ে যায় ক্যালকাটা অক্শন কোম্পানি।

Currency Office in Dalhousie Square from the 'Walter Hawkins Nightingale' (PWD) collection Album of Views of Calcutta, 1870

একই স্থান থেকে তোলা বর্তমান ছবিতে কারেন্সি অফিস (ঘরে বাইরে মিউজিয়াম)

পরবর্তী ঘটনা ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দ, পড়ে থাকা এই অক্শন কোম্পানির জমি কিনে নেয় আগ্রা ব্যাংকআগ্রা ব্যাংক, ১৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দে তৈরি হওয়া এই ভারতীয় ব্যাংক ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনের ইউনাইটেড সার্ভিস ব্যাংকের সাথে যুক্ত হয়। ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে আবার এই আগ্রা ব্যাংকের সাথে যুক্ত হয় লন্ডন ব্যাংকার হাউসের এক পার্টনার মাস্টারম্যান এবং এথেকেই সূত্রপাত হয় আগ্রা অ্যান্ড মাস্টারম্যান্স লিমিটেড। কিন্তু এই সংযুক্তিকরণ বেশিদিন টিকলো না, মাত্র তিন বছরের মধ্যেই আগ্রা ব্যাংক থেকে আলাদা হয়ে যায় লন্ডন ব্যাংক।

View of the east side of Tank Square Calcutta by William Baillie (courtesy British Library)

বিদেশে না হলেও দেশের মাটিতে আগ্রা ব্যাংক চলতে থাকে। ১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দে এই আগ্রা ব্যাংক প্রথম কলকাতায় তাদের সংস্থা স্থাপন করে ২ নং কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে। কিন্তু পরবর্তীকালে লন্ডন ব্যাংকের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হওয়ায়, পুনরায় আগ্রা ব্যাংক কলকাতায় তাদের নতুন শাখা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগী হয়। আর ঠিক এই কারণেই কলকাতায় ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে আগ্রা ব্যাংক ১ নং ট্যাঙ্ক স্কোয়ার ইস্ট -এর জমিটি কিনে নেয় এবং তৈরি করে তাদের নতুন শাখা। বর্তমানে আমরা ডালহৌসি স্কোয়ারের (লাল দীঘির) দক্ষিণ-পূর্বদিকে যে ইটালিয়ান প্যাটার্নের বাড়িটি দেখতে পাই, তা আসলে এই আগ্রা ব্যাঙ্কেরই তৈরি করা সেই বাড়ি। যা পরবর্তীকালে কলকাতার কারেন্সি বিল্ডিং নামে পরিচিত হয়।  ত্রিতল বিশিষ্ট এই বাড়িটি তৈরি হয়েছিল প্রায় ৮৭৬২ স্কোয়ার ফুট জায়গা জুড়ে নতুন বাড়ি তৈরি হলেও খুব বেশিদিন আগ্রা ব্যাংক এখানে থাকতে পারেনি। লন্ডন ব্যাংকের সঙ্গে বিচ্ছেদর পর থেকেই ক্রমাগত তাদের পুঁজির রিসোর্স কমতে থাকে। মাত্র দু-এক বছরের মধ্যেই আগ্রা ব্যাংক এই বাড়িটির সামনের অংশ (লাল দীঘির সম্মুখে) গভর্নমেন্টকে বিক্রি করে দেয়। পরবর্তীকালে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে আগ্রা ব্যাংক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে বাড়িটির পুরো অংশই গভর্নমেন্ট কিনে নেয়।

'আগ্রা অ্যান্ড মাস্টারম্যান্স ব্যাংক লিমিটেড' ও 'আগ্রা ইউনাইটেড সার্ভিস ব্যাংক লিমিটেড' -এর রশিদ (সৌজন্যে ব্রিটিশ লাইব্রেরী)

অফিস অফ ইস্যু অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অফ গভর্নমেন্ট পেপার কারেন্সিঃ-

১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে জারি হওয়া পেপার কারেন্সি অ্যাক্ট অনুযায়ী সর্বপ্রথম গভর্নমেন্টকে নিজ অধীনে কারেন্সি তৈরির (ছাপানোর) নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইমতো ব্রিটিশ সরকার কলকাতায় টাঁকশাল গঠন করলেও গভর্নমেন্টের প্রয়োজন পরে আরও একটি জায়গার, যেখান থেকে গভর্নমেন্টের নিজস্ব মুদ্রার আদানপ্রদান হবে আর ঠিক এই কারণেই গভর্নমেন্ট ১৮৬৮-৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ডালহৌসি স্কোয়ারের এই বাড়িটি আগ্রা ব্যাংকের থেকে ১০,৭৩,১০৯ টাকায় কিনে নেয়। যা ছিল একসময় আগ্রা ব্যাংক তাই এখন কারেন্সি অফিস হিসাবে রূপান্তর হয়।

কারেন্সি বিল্ডিং ও তার আর্কিটেকচারঃ-

১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে এই ইমারতটি তৈরি করে আগ্রা ব্যাংক। যা পরবর্তীকালে ১৮৬৮-৬৯ থেকে রূপান্তর হয় কলকাতার কারেন্সি অফিসে (Office of Issue and Exchange of Government Paper Currency)। প্রথমেই আমাদের মনে রাখা উচিত, বাড়িটি তৈরি হওয়া থেকে পরবর্তীকালে তার ব্যবহার পর্যন্ত সমস্তটাই ব্যবহার হয়েছে মুদ্রার কোষাগার হিসাবে। সুতরাং বাড়িটির ভিত্তি অন্য সমস্থ বাড়ির থেকে আলাদা হওয়াই উচিত।

ডালহৌসি স্কোয়ারের এই বাড়িটি পুরোটাই তৈরি হয়েছে ইটালিয়ান প্যাটার্নে। ভবনটির প্রবেশের মুখেই রয়েছে ত্রিখিলান বিশিষ্ট ঢাকা বারন্দা, যার সম্পূর্ণটাই লোহার অলংকরণে তৈরি। এছাড়াও বাড়িটির সম্মুখের প্রবেশদ্বার(ফটক) তিনটি, যার সম্পূর্ণটাই নিরেট লোহার তৈরি। তবে বাড়িটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য বাড়ির চতুর্দিকের ভেনেসন উইন্ডো (জানলা)। এই ভেনেসন জানলা সাধারণত দেখা যায় ইতালিতে, যা ইতালির প্যালাদিয়ান উইন্ডো শিল্পকলার বিস্তারিত রূপ। ত্রিতল বিশিষ্ট এই বাড়িটির আগাগোড়া তৈরি হয়েছে বড় বড় ইট ও চুনার পাথরে। বাড়িটির প্রতিটি তলার ছাদে ব্যবহৃত হয়েছে লোহার করিকাঠ। এছাড়াও ঘরের প্রতিটি মেঝেতে ব্যবহার হয়েছে ইটালিয়ান মার্বেল।

ইটালিয়ান আর্কিটেকচার

ইটালিয়ান আর্কিটেকচারে ভেনেসন উইন্ডো

বাড়িটির মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের পরই ছিল বাড়ির সেন্ট্রাল হলহলের এই অংশে ছিল এক্সচেঞ্জ কাউন্টার; যেখানে টাকা, সোনা, রূপোর মতো জিনিসের আদানপ্রদান করা হত তবে আর্কিটেকচারের দিক থেকে বাড়িটির প্রধান আকর্ষণ তিনটি বিশাল গম্বুজ। সেন্ট্রাল হলের উপরের দিকে ছিল এই তিনটি গম্বুজ। সম্পূর্ণ কাঁচের আবরণে ঢাকা এই গম্বুজগুলি দিয়ে দিনের আলো প্রবেশ করতে পারত হলের আরও ভিতরে বামদিকের অংশে ছিল এক বিশাল বড় দেরাজ (ভল্ট)। প্রায় একটি ঘরের সমান দেরাজটির ছাদ, দেওয়াল ও মেঝে পুরোটাই লোহার তৈরি। দেরাজে প্রবেশের জন্য ছিল প্রায় ৬ ইঞ্চি ঘনত্বের লোহার দরজা, যাকে আবার বাইরে থেকে আরও একটি লোহার দরজা দ্বারা সুরক্ষিত করা হয়েছিল। এবং সর্বশেষ এই দেরাজটি একটি সম্পূর্ণ লোহার গারদ দ্বারা বেষ্টিত ছিল।

কারেন্সি অফিসের ভল্ট রুম (দেরাজ) ১, বর্তমানে চিত্রশিল্পী নিমাই ঘোষের প্রদর্শনী (যদিও এখন আর লোহার সেই ঘনত্ব নেই)

কারেন্সি অফিসের ভল্ট রুম (দেরাজ) ২, বর্তমানে অডিটোরিয়াম (যদিও এখন আর লোহার সেই ঘনত্ব নেই)

১৮৬৯ থেকে এটাই ছিল ভারত সরকারের অফিস অফ ইস্যু অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অফ গভর্নমেন্ট পেপার কারেন্সি। পরবর্তীকালে যখন এই মুদ্রা বিনিময় দেখাশোনার জন্য ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া গঠন হয়, তখন ডালহৌসি চত্বরের এই ইমারতটিই ছিল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রথম কার্যালয়। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে রিজার্ভ ব্যাংক মুম্বাইতে স্থানান্তকরনের আগে, ১৯৩৫-১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতার এই ভবন থেকেই রিজার্ভ ব্যাংক পরিচালিত হয়ে এসেছে।

দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকা কারেন্সি বিল্ডিং -এর জীর্ণ দশা (সৌজন্যে verdensteatret.com)
 
মিউজাম রূপে প্রকাশের আগে কারেন্সি বিল্ডিং -এর পুনঃসংস্কার (সৌজন্যে verdensteatret.com)

রিজার্ভ ব্যাংক উঠে গেলে এই বাড়িটি গিয়ে পড়ে সেন্ট্রাল পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের (CPWD) কাছে। তারপর থেকে দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরে এই বাড়িটি ব্যবহার হয়ে এসেছে শুধুমাত্র গুদামঘর হিসাবে। দীর্ঘদিন অবহেলায় বাড়িটি ব্যবহৃত হওয়ায় ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট সিদ্ধান্ত নেয় বাড়িটি ভেঙে ফেলে সেই জায়গায় নতুন ভবন গঠন করার। তবে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে এই ভাঙার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল ডিপার্টমেন্ট (INTACH) ও কলকাতা পৌর সংস্থা (KMC)। কিন্তু দেখা গেল এর মধ্যেই ইমারতটির যা ক্ষতি হওয়ার ছিল তা হয়ে গেছে। ভবনটির সেন্ট্রাল হলের সৌন্দর্য যে তিনটি গম্বুজ, তা ইতিমধ্যেই ভেঙে ফেলা হয়েছে। এবং এই ভাঙন কোনপ্রকারেই পুনঃনবীকরণ সম্ভব নয়। শেষে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে এই ইমারতটি ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের (Archeological Survey of India) আওতায় চলে এলে, প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ পুরো ভবনটির পুনরুদ্ধার করে মিউজিয়ামে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সেন্ট্রাল হলের ভেঙে পড়া গম্বুজ

পূর্ব দিক থেকে কারেন্সি বিল্ডিং এর সেন্ট্রাল হল

পশ্চিম দিক থেকে কারেন্সি বিল্ডিং এর সেন্ট্রাল হল

ঘরে বাইরে মিউজিয়ামঃ-

সম্প্রতি ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে এই ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিংটি রূপান্তর হয় মিউজিয়ামে। ঘরে-বাইরে (The World, The Home and Beyond) এই নাম নিয়েই শুরু হয় কলকাতার নতুন মিউজিয়াম, Art and the Artist of Bengal। ভারত সরকার সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় (The Ministry of Culture, Government of India) দ্বারা অনুমোদিত ও দাগ (DAG) দ্বারা পরিচালিত এই মিউজিয়াম। কী আছে এই মিউজিয়ামে? আছে বাংলার বিভিন্ন সময়ের শিল্পী ও তাদের সৃষ্টি বিভিন্ন শিল্পের প্রদর্শনী। মিউজিয়ামের পুরো প্রদর্শনটি ভাগ করা হয়েছে মূলত ১২ টি বিভাগে। দুই শতাব্দী যাবৎ বাংলার বিভিন্ন শিল্পীদের সৃষ্টি ৬০০ র বেশি চিত্র ও শিল্পের প্রদর্শনী। যার মধ্যে রয়েছে শান্তিনিকেতনের প্রশিক্ষ শিল্পকলা থেকে ইউরোপীয় শিল্পকর্ম, বাংলার মডার্ন আর্ট থেকে গ্রামবাংলার লোকশিল্প, কালিঘাট পটচিত্র থেকে রাষ্ট্রীয় শিল্পীদের শিল্পকলা।

দ্বিতলের প্রদর্শনী

বিভিন্ন সময়ের বাংলার শিল্পী, সেই বিষয়ে নতুন প্রজন্মের অধ্যয়ন

বর্তমানে মিউজিয়ামে প্রবেশের পর রয়েছে অভ্যর্থনা ক্ষেত্র। যার পর রয়েছে মিজিয়ামের গম্বুজহীন সেন্ট্রাল হল, যা এখনও খোলা আকাশের নীচে। মিউজিয়ামের নীচের এই চত্বরটিকে ভাগ করা হয়েছে তিনটি অংশে।

  • স্কাল্পচার ইন বেঙ্গল বাংলার বিভিন্ন শিল্পীদের তৈরি ভাস্কর্য। অন্যান্য ভাস্কর্যের সাথে রয়েছে বাংলার বিখ্যাত শিল্পী রামকিঙ্কর বেইজ এর বিভিন্ন ভাস্কর্য।
  • ইনার আই প্রদর্শনীর এই অংশটি গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিহীনদের জন্য।  
  • সত্যজিৎ রায় (নিমাই ঘোষের ফটোগ্রাফ) এই প্রদর্শনীটি আসলে সমস্থ বাঙালির নস্টালজিয়া। সত্যজিৎ রায়ের প্রধান চিত্রগ্রাহক নিমাই ঘোষের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত বিভিন্ন সিনেমার ছবি ও তাঁর নিজস্ব ছবি।
প্রদর্শনীর বিষয় - সত্যজিত রায় (নিমাই ঘোষের ফটোগ্রাফি)

পাঠগৃহ

মিউজিয়ামে উপরের তলায় যাওয়ার জন্য রয়েছে কাঠের সিঁড়ি। সিঁড়ির পাশেই দেওয়ালে জায়গা করে নিয়েছে সাদাকালোয় মোড়া বিভিন্ন ছবির প্রদর্শনী। যাতে প্রকাশ পেয়েছে ব্রিটিশদের আমলে কলকাতার কিছু প্রাচীন দুর্লভ ছবি। মিউজিয়ামের উপরের অংশেও রয়েছে বিভিন্ন প্রদর্শনী। বাংলা শিল্পকলার এক আমূল পরিবর্তন ১৭৬৯ থেকে শুরু করে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রয়েছে বিভিন্ন ধারার চিত্র। যার মধ্যে মূলত ভাগ করা হয়েছে

  • বাংলায় ইউরোপিয়ান আর্টিস্ট
  • আরলি বেঙ্গল ইন্ডিজেনস আর্ট
  • বেঙ্গল স্কুল অফ আর্ট
  • দ্যা লেজেন্ড অফ ইন্ডিয়ান আর্টস (যামিনী রায়, নন্দলাল বসু, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সৈলজ মুখার্জী, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ)
  • রিয়ালিজম অ্যান্ড একাডেমিক আর্ট ইন বেঙ্গল
  • শান্তিনিকেতন রীতি রামকিঙ্কর বেইজ, বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ
  • কালিঘাট পটচিত্র
  • ভারতের রাষ্ট্রীয় শিল্পীদের শিল্পকলা 
মিউজিয়ামের দ্বিতলের প্রদর্শনী

প্রদর্শনীতে ইউরোপিয়ান চিত্রকলা

কালিঘাট পটচিত্রে এক বাবু ও এক বারাঙ্গানার অন্তরঙ্গ মুহূর্ত

বাংলার দেবদেবী

শিল্পী - যামিনী রায়

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কলকাতার দুটি অত্যন্ত জনপ্রিয় মিউজিয়াম মেটক্যাফে হলের আমি কলকাতাওল্ড কারেন্সি বিল্ডিং (মুদ্রা ভবন) এর ঘরে বাইরে কলকাতার ইতিহাসকে আজও বহন করে চলেছে।

******************************************************

লেখা, গবেষণা ও ছবি - প্রীতম নস্কর  

ই-মেল - pritamnaskar.pn@gmail.com

ব্লগটি ভালো লেগে থাকলে ব্লগের লিঙ্ক শেয়ার করতে পারেন, তবে পূর্বানুমতি ছাড়া আমার তোলা আলোকচিত্রগুলি এবং ব্লগের রচনাগুলি অন্য কোথাও কপি-পেস্ট বা বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা চলবে না।

******************************************************

মিউজিয়াম প্রবেশের সময়সূচী ও টিকিট মূল্যঃ- 

  • বছরের সমস্ত দিন, শুধুমাত্র সপ্তাহের সোমবার ও জাতীয় ছুটির দিন বাদ দিয়ে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এই মিউজিয়াম খোলা থাকে।
  • প্রবেশ অবাধ। কোন প্রবেশমূল্য নেই।
  • মিউজিয়ামের ভিতরে ফটো তোলার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

কীভাবে যাবেনঃ-

কারেন্সি বিল্ডিং বা ঘরে বাইরে মিউজিয়াম অবস্থিত ডালহৌসি স্কোয়ারে, তাই হাওড়া থেকে কলকাতাগামী যেকোনো বাসেই পৌঁছানো যাবে ডালহৌসি স্কোয়ার।

গুগল ম্যাপ / কোঅরডিনেটঃ-

22°34'13.6"N 88°21'00.8"E

কলকাতার আরও কিছু মিউজিয়ামঃ-

তথ্যসূত্রঃ-

  • Calcutta Old And New - by H.E.A. Cotton
  • Hand Book to Calcutta - by W. Newman & Co. (Third Edition)
  • কলিকাতা সেকালের ও একালের - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়
  • The History of the Bank of Bengal - G.P.Symes Scutt

Comments